নিজস্ব প্রতিবেদন ::: শিবগঞ্জ-মেজরটিলা রুটে অবৈধ টমটমের দাপট অদক্ষ চালক, চাঁদাবাজি ও বিদ্যুৎ অপচয়ে চরম ভোগান্তি সিলেট নগরের শিবগঞ্জ–মেজরটিলা এলাকায় প্রতিদিন রাস্তায় নামছে শত শত অবৈধ ও অদক্ষ চালকের চালিত ব্যাটারিচালিত টমটম ও ইজিবাইক। এসব যানবাহনের লাগামহীন চলাচলে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট, বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। জনসাধারণের অভিযোগ, প্রশাসনের চোখের সামনেই নির্বিঘ্নে চলছে এসব অনিয়ম, কিন্তু তদারকির চিহ্ন নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে শিবগঞ্জ এলাকায় সেই নিষেধাজ্ঞা যেন শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। মেজরটিলা থেকে নাইয়রপুল পর্যন্ত প্রতিদিন ১৯০টির বেশি অবৈধ টমটম ও ইজিবাইক নিয়মিত যাতায়াত করছে। চালকদের বেশিরভাগই অদক্ষ, লাইসেন্সবিহীন এবং ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ। পথচারী ও যাত্রীদের অভিযোগ এই যানবাহনগুলোর নেই কোনো সিগন্যাল মানার অভ্যাস, নেই ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধা।
এলাকাবাসী জানায়, এসব টমটম প্রতিদিন দীর্ঘ সময় চার্জে রাখা হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, একটি টমটম দৈনিক গড়ে ১,০০০ থেকে ১,৩০০ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ করে। দেশের বিদ্যুৎ সংকট, লোডশেডিং আর সাশ্রয়ী উদ্যোগ চলমান থাকা সত্ত্বেও এসব অবৈধ যানবাহনের চার্জিং কার্যক্রমে বিপুল বিদ্যুৎ অপচয় হচ্ছে। প্রতিদিন ৬-৭ ঘণ্টা চার্জে থাকা এসব যানবাহনের প্রকৃত সংখ্যা নিয়েও নেই কোনো নির্ভুল তথ্য।
অবৈধ চলাচলের পাশাপাশি চাঁদাবাজির চক্রও সক্রিয় রয়েছে এলাকায়। চালকদের অভিযোগ, প্রতিটি টমটম থেকে প্রতিদিন ১০০ টাকা করে আদায় করছে একটি গোপন চক্র। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালেই রেকার দিয়ে গাড়ি জব্দ করার ভয় দেখানো হয়। আর রেকার করা হলে তা ছাড়াতে লাগে ১,০০০ টাকা। ভয়-ভীতি ও জিম্মি করে প্রতিদিন হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে বিপুল অর্থ। তবে কারা এই চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত এ বিষয়ে মুখ খুলতে চান না কেউই।
দৈনিক আয় ৫০০–৬০০ টাকার বেশি নয় জানিয়ে বুলবুল নামের এক চালক বলেন,“আমরা গরিব মানুষ। এর মধ্যেও প্রতিদিন চাঁদা দিতে হয়। এটা তো জুলুম ছাড়া কিছু না।”
এই বিষয়ে জানতে টিলাগড় রোডের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের (টিআই) সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি প্রথমে ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে বারবার কল করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসীর দাবি, প্রশাসনের কঠোর নজরদারি এবং আইন বাস্তবায়ন না হলে শিবগঞ্জ–মেজরটিলা রুটে এই বিশৃঙ্খলা আরও বাড়বে, আর ভোগান্তি বাড়বে নগরবাসীর।
Leave a Reply